১। সংহতি
অক্ষরে অক্ষরে কিছু অভিজ্ঞতা আঁকা যায়
বাকি অনুভূতি এদিক ওদিক পালায়
ভরদুপুরে পুলিশের সাইরেন, রাগী বাঁশির সুরে
চাপা পড়ে আমাদের অঘটিত সংলাপ।
তোমার পাড়ায় যতগুলি দুর্ঘটনার
আভাস পাওয়া যায়, আমার শহরে
তার বেশি আতঙ্কেরা সিঁড়ি ভেঙে
দুদ্দাড় রুখে দাঁড়ায়, দরজা, বারান্দা,
বেরুবার গলি, যাকে তাকে ডেকে কোন
সাড়াশব্দ পাইনা বলে তোমাকে ডাকি।
তখুনি বুকপকেট থেকে টেলিফোন ফুটপাতে
তোমার আমার মুখ আয়নায় চৌচির।
তোমার চোখে আমার মুষড়ে পড়া
কিছু মুহূর্তের দূরাচারী প্রীতি –
বন্দী ভূগোলে চেনাজানা দুঃসংবাদে
ভরা রাজনীতি ও সংসারের ওপারে
দাঁড়িয়ে নিরিবিলি সংহতি দাবী করে।
২। ভূগোলের কান্না
মনে মনে বলেছিলাম তাঁকে
একই গোলার্ধ বলয়ের ভিতরে
যা কিছু বলার ছিল
বলা হয় নাই তাঁকে।
সমুদ্র আর নদীদের তীরে কে বসেছিল
বোলো না বোলো না তাঁকে –
কোথাকার মেঘ কোথায় উড়ে গেছে
কোথাকার মেয়ে কোথায় দূরে গেছে
কোথাকার পাহাড় কোথায় ডুবেছে
ভূগোলে কী রহস্য বাকি আছে?
আকাশে আকাশে বৃষ্টিহীন মেঘ
কোন কোন ঝড় তবু থামতে জানে না,
বিরান জলাভূমির তীরে নগরী বৃক্ষহীন
একা একা কাঁদে।
৩। জল- বায়ু- সঙ্কট
খরা ও মড়কের দিনে গুনগুনিয়ে
কি গান গাইবে তোমরা?
জল ও বায়ুর জন্য যদি হাহাকার থাকে
কাহার জন্য আমাদের পদ্যের পাতা
চিবিয়ে খাবার জন্য বর্ষার দেশে
মুখে শুধু বালু উঠবে সেই জন্য?
ভাত মাছ ডাল খেয়ে যে শিশু
বেড়ে উঠবে ভেবেছিল
তার শরীরে যেদিন কালো ছত্রাক
তার পেটে গত শতাব্দীর বীজাণু
জল ও বায়ু ক্ষোভে
সামান্যেরা সেদিন অসন্তোষে রাজি হবে?
কে তখন স্লোগান দেবে কি করে
তোমাদের গলা পিপাসা, উত্তাপে
শুকিয়ে গেলে, জমানো কলমগুলো খুলে
দ্বিতীয় বার ব্যবহার করব বলে
প্লাস্টিক ব্যাগগুলো জমিয়ে
নতুন শিল্পমেলায় আমরা শুধু হেঁটে বেড়াব?
আমাদের কলমে কী প্রজাতির পদ্য খুলবে?
যে গদ্যের লাইন বর্ষার অপেক্ষায়
কাঁদতে চাইবে, জলভরা তাঁর
শরীর এত পানি খরচায় রাজি হবে?
ধনী লোকগুলো রকেটে চড়ে
মঙ্গলগ্রহে উড়ে যাবে,
পোড়ামুখ খালি পেট চটা জিভ
পৃথিবীর ফোঁটা ফোঁটা বিষ
আমরা ও তোমরা চেটেপুটে খাব?
ছবি- কৌশিক সরখেল
খুব ভাল লাগল। এটুকু বলায় যথেষ্ট নয়। শব্দ থেকে উঠে আসা স্বর ছুঁয়ে থাকবে। দিনের আলো যেদিকেই যাক। ভাল থাকুক কলম…